সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০০৮

আমার প্রতিচ্ছবি

মুখটা তুলে আকাশটাতে দেখ আরেকবার
তোমার সাথে আছি আমি যে চিরকাল
জোছনার আলো যখন তোমার গায়ে পড়ে
আমি তখন থাকি তোমারি পাশে পাশে

মনটা খারাপ করে যখন তুমি একা থাকো
ভেবো আমি শোনাই তোমায় মজার কোন গল্প
চোখের পানি মুছে ফেলে ভেবো একটু ক্ষণ
তোমার মাথায় হাতটা বুলাই যখন তখন

রাতের আকাশ ভরা তারা হয়তোবা চলে যাবে
থাকবো হয়ে এই আমি শুকতারা
শীতের সকাল গাছের পাতা হয়তোবা ঝরে যাবে
থাকবো হয়ে এই আমি নীল আকাশ

যত বার গানটা শুনি বার বার শুধু তোদের কথাই মনে পড়ে- মুরাদ, সুমি আর বরকত। ছিল আরো অনেকেই, কিন্তু এই গানটা শুনলে তোদের তিনজনের কথাই বেশি মনে পড়ে।
আমার স্মৃতিতে অর্থহীনের গান মানেই মুরাদ। সুতরাং ওর কথা মনে পড়বেই। বরকতও অর্থহীনের গান খুব শুনতো। সুমিকে গানটা ওই দিয়েছিল। সুমির কাছে কখনো কোন গানের কথা শুনিনি। তাই একদিন যখন গুনগুন করে গানটা গাইতে শুনলাম তখন খুব অবাক হয়েছিলাম। জিজ্ঞেস করেছিলাম এই গান কেন। উত্তরে সে বলেছিল গানটা তার কত ভাল লাগে সে কথা।
আমার কাছে অর্থহীনের গান সবসময়ই গড়পড়তা রকমের ছিল। কিন্তু এই গানটা? অসাধারন। আমি বারবার মুগ্ধ হয়ে গানটা শুনি আর পুরনো স্মৃতিরা আমাকে আঁকড়ে ধরে। মনে পড়ে যায় সেই রামসাগর থেকে ঠাকুরগাঁ যাবার পথ। মনে পড়ে সেই রাতের আকাশ।
পেছনে অন্যরা গান গাইছিল। আমি ছিলাম একটু অসুস্থ, তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আমি ওদের সাথে গলা মেলাতে পারছিলাম না। হঠাৎ সুমি এই গানটা ধরল । তার সাথে গলা মেলাল মুরাদ, নিশি, সোহেল ওরা সবাই। সবার সম্মিলিত কন্ঠে এই গান। আহ! কি ভালই না লেগেছিল। মনে হলো মূহুর্তেই আমিও যেন সুস্থ। গুন গুন করেই গলা মেলাই ওদের সাথে। আর ওদিকে, তখন রাতের আকাশের সন্ধ্যতারাটা শুকতারা হবার প্রতীক্ষায় জ্বলজ্বল করে জ্বলছে।
এখন সবাই কত দূরে। কেউ ঢাকা, কেউ টরেন্টো, কেউ হ্যলিফেক্স। আমার এখানে শুকতারা এখন ওদের কাছে সন্ধ্যাতারা। একই পৃথিবীতে আমরা, তবু দূরত্ব কত বিশাল। ব্যস্ততা সবারই এখন আগের মতই। শুধু পার্থক্য এই যে, ছুটিগুলো এখন আর কমন পড়ে না। তবু মনে মনে ভাবি, একদিন দেখা হবেই। আবার আগের মতই আমরা গলা মেলাব একসাথে। MME'02-এর সবার মতই আমিও বিশ্বাস করি... ... ..."মিলব আবার একসাথে"।।